Sunday, October 7, 2012

পর্দার আড়ালে : ডিজনির প্রথম অ্যানিমেশন

১৯৩৭ সালে মুক্তি পাওয়া ডিজনির প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য অ্যানিমেশনটি ছিল 'স্নো ওয়াইট এন্ড দ্য সেভেন ডুওয়ার্ফস। পঁচাত্তর বছর আগে অ্যানিমেশন ফিল্ম বানানোটা এত সহজ ছিল না। তখন ছিল না কোন কম্পিউটার, কোন প্রযুক্তি। ঠিক কিভাবে ঐ সময় এমন একটি ফিল্ম বানানো হয়েছিল, সেটা বোঝার জন্য যেতে হবে সে সময়ের ডিজনি স্টুডিওর ভেতরে।

সাতশ'রও বেশি সৃজনশীল কর্মী তখন দিন-রাত খেটে কাজ করেছেন এই পরীক্ষামূলক অ্যানিমেশনটির জন্য। প্রথম কাজ ছিল একটা চমৎকার গল্প খুঁজে বের করা। তার পর শুরু হয় আসল কঠিন কাজ।

প্রতিটা ফ্রেমের প্রতিটা ছবি আঁকতে হয়েছে তাঁদের নিজ হাতে। অনেক আঁকি-বুঁকির পর তাঁরা শেষ পর্যন্ত কয়েকশ' খসড়া ছবি দাঁড় করায়। ওদিকে স্ক্রিপ্ট আর ডায়ালগ তৈরি করে ফেলেন পরিচালক। এরপর সঙ্গীত পরিচালকদের সাহায্যে তৈরি করেন প্রতিটি দৃশ্যের জন্য মিউজিক।

টেস্ট ক্যামেরা ডিপার্টমেন্টে অ্যানিমেটরদের খসড়া ড্রইংগুলোর ছবি তুলে ফেলা হয় সিকুয়েন্স অনুযায়ী। অ্যানিমেটর প্রজেক্টরের সাহায্যে দেখে নেন ছবিগুলো কতোটা ভাল হয়েছে।

যথেষ্ট ভাল হলে, হাজার হাজার পেন্সিলে আঁকা ছবি চালান করে দেয়া হয় ইংকিং ডিপার্টমেন্টে। এখানে শত-শত মেয়ে ড্রইংগুলোকে স্বচ্ছ সেলুলয়েড দিয়ে ঢেকে দেন। তারপর তাঁরা প্রত্যেকটি লাইন কালি দিয়ে ট্রেইস করেন। এবার ছবিগুলো তৈরি হয়ে যায় শেষ প্রক্রিয়াটির মধ্য দিয়ে যাওয়ার জন্য। সেটি হল, ছবিগুলোকে রং করা। ল্যবরেটরিতে অভিজ্ঞ রসায়নবিদরা এই অ্যানিমেশনের জন্য তৈরি করেছিলেন ১৫ হাজারেরও বেশি বিভিন্ন শেডের রং। সেই রং দিয়ে ছবিগুলোতে প্রাণ দেওয়া হয়। অন্য দিকে একই সাথে আঁকা হতে থাকে ব্যাকগ্রাউন্ডের স্টেজ সেটিং এর ছবি। ছবিগুলো আঁকা হয় জল রঙে।

কিন্তু আসল কাজ এখনো বাকি। সেলুলয়েড আর ব্যাকগ্রাউন্ডকে একসাথে করে মাস্টার ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলা হয়। এর পর ফিল্ম চলে যায় টেকনিশিয়ানদের হাতে। আর রেকর্ড হতে থাকে সাউন্ড এফেক্ট। সব শেষে ফিল্মটির জন্য রেকর্ড করা হয় অর্কেস্ট্রার মিউজিক।

আর এর সাথে সাথেই শুরু হয়ে যায় বিশ্বজুড়ে অ্যানিমেশনের ইন্দ্রজাল।

No comments:

Post a Comment